Ticker

200/recent/ticker-posts

Header Ads Widget

Responsive Advertisement

ভগবান শব্দের অর্থ

👉‘ভগ’ শব্দের অর্থ ছয়টি ঐশ্বর্য, এবং ‘বান’ শব্দের অর্থ সমন্বিত।বিষ্ণু পুরাণে ( ৬/৫/৪৭) বলা হয়েছে- তিনিই ভগবান যিনি পূর্ণ রূপে ছয়টি ঐশ্বর্য বা ষড়ৈশ্বর্য সমন্বিত। ছয়টি ঐশ্বর্য হচ্ছে :-

১। ঐশ্বর্য বা ধনসম্পত্তি ২। বীর্য বা বলবত্তা ৩। সমগ্র যশ ৪। শ্রী বা সৌন্দর্য ৫। সমগ্র জ্ঞান ৬।সমগ্র বৈরাগ্য।
👉প্রত্যেক মানুষের মধ্যে বা দেবদেবীদের মধ্যে এই ঐশ্বর্যগুলি কম-বেশি আছে। যার যত বেশি তিনি তত আকর্ষক। যে অত্যন্ত ধনশালী, যে খুব বলশালী, যে সৌন্দর্যবান, যে জ্ঞানবান, বৈরাগ্যযুক্ত----অন্যেরা তার প্রতি আকৃষ্ট হয়। কিন্তু এগুলো মানুষ বা দেবতা কারো মধ্যে পূর্ণমাত্রায় নেই। এই ছয়টি ঐশ্বর্য একমাত্র শ্রীকৃষ্ণের মধ্যে পূর্ণমাত্রায় বিদ্যমান।
✋শ্রীকৃষ্ণই পরম ঐশ্বর্যশালী বা সম্পদশালী— অহং সর্বস্য প্রভবঃ--- (গী. ১০/৮), সবচেয়ে বলশালী - - - তাঁর শক্তির মাত্র একাংশে সমগ্র মহাজগৎ, মহাবিশ্ব স্হিত— একাংশেনস্হিতজগৎ (গী. ১০/৪২)।
✋শ্রীকৃষ্ণ সবচেয়ে যশস্বী---পৃথিবীতে লক্ষ লক্ষ কৃষ্ণ মন্দির এবং অন্যান্য মন্দিরে নিরন্তর ভগবান শ্রীকৃষ্ণের যশোমহিমা ঘোষনা করছে। শ্রীকৃষ্ণের দিব্য দেহ সকল সৌন্দর্যের নিলয়। শ্রীকৃষ্ণ স্বয়ং জ্ঞানস্বরূপ, বেদেৱ বেদ্য বিষয়, বেদবিদ —বেদৈশ্চ সর্বৈরহমেব বেদ্যো বেদবিদেব চ অহম্ ( গী. ১৫/১৫)।
✋ভগবান শ্রীকৃষ্ণ পরম বৈরাগ্যবান, অনাসক্ত-----তাঁর অবতরণ-কালীন কার্যকলাপেই তা স্পষ্ট। কংস বধ করে তিনি তাঁর পিতা উগ্রসেনকে সিংহাসনে অধিষ্ঠিত করেন, কৌরবদের নিহত করে যুধিষ্ঠিরকে অধিষ্ঠিত করেন হস্তিনাপুরের সিংহাসনে। শ্রীকৃষ্ণ এতই ভক্তপ্রেমবশ্য যে তিনি তাঁর ভক্তের নিকট নিজেকে পর্যন্ত বিকিয়ে দিতে প্রস্তুত থাকেন —যে ভজন্তি তু মাং ভক্ত্যা ময়ি তে তেষু চাপ্যহম (গী. ৯/২৯)।
👉এই ছয়টি ঐশ্বর্য একমাত্র শ্রীকৃষ্ণের মধ্যেই পূর্ণমাত্রায় বিদ্যমান বিধায় তিনিই হচ্ছেন পরমেশ্বর ভগবান।
👉কৃষ্ণ ও নারায়ণ মূলত একই তত্ত্ব হলেও গুণবৈশিষ্ট্য অনুসারে নারায়ণ অপেক্ষা কৃষ্ণের মধ্যে অধিক উৎকর্ষ দেখা যায়। পরম বৈষ্ণব ষড়গোস্বামীর অন্যতম শ্রীল রূপগোস্বামীপাদ শ্রীভক্তিরসামৃত গ্রন্হে ৬৪ প্রকার গুণের কথা উল্লেখ করেছেন। সেগুলির মধ্যে ৫০ টি গুণ সাধারন জীবের মধ্যে অতি বিন্দু বিন্দু পরিমাণ থাকতে পারে। ব্রহ্মা শিব প্রমুখ শ্রেষ্ঠ দেবতাদের মধ্যে অধিক পরিমাণে এই ৫০টি গুণ বিদ্যমান। নারায়ণ ও কৃষ্ণের মধ্যে পরিপূর্ণ ভাবে সেই ৫০টি সহ আরো ১০টি গুণ রয়েছে। নারায়ণের ৬০টি গুণ পূর্ণ। কিন্তু কৃষ্ণের মধ্যে অতিরিক্ত আরো ৪টি গুণ রয়েছে যা নারায়ণের মধ্যেও নেই। এই ৪টি গুণের মধ্যে লীলামাধুরী, প্রেমমাধুরী, বেণুমাধুরী ও রূপমাধুরী একমাত্র শ্রীকৃষ্ণের মধ্যেই সম্পূর্ণ বিদ্যমান। এ থেকে বুঝা যায় গুণবৈশিষ্ট্যে নারায়ণ থেকে শ্রীকৃষ্ণই শ্রেষ্ঠ।
হরে কৃষ্ণ