Ticker

200/recent/ticker-posts

Header Ads Widget

Responsive Advertisement

অহিংসা পরম ধর্ম (পর্ব-১)

 

পত্রং পুষ্পং ফলং তোয়ং যো মে ভক্ত্যা প্রযচ্ছতি।

তদহং ভক্ত্যুপহৃতমশ্নামি প্রযতাত্ননঃ।।

যৎকরোষি যদশ্নাসি যজ্জুহোষি দদাসি যৎ।
যত্তপস্যসি কৌন্তেয় তৎকুরুষ্ব মদর্পণম্।।
[ শ্রীমদ্ভগবদগীতা ৯/২৬-২৭ ]

🌿অনুবাদঃ
যে বিশুদ্ধচিত্ত নিষ্কাম ভক্ত ভক্তি সহকারে আমাকে পত্র, পুষ্প, ফল ও জল অর্পণ করেন, আমি তাঁর সেই ভক্তিপ্লুত উপহার প্রীতি সহকারে গ্রহণ করি। হে কৌন্তেয়! তুমি যা অনুষ্ঠান কর, যা আহার কর, যা হোম কর, যা দান কর এবং যে তপস্যা কর, সেই সমস্তই আমাকে সমর্পণ কর।

অহিংসা পরম ধৰ্ম্মস্তথাহিংসা পরো দমঃ।
অহিংসা পরমং দানমহিংসা পরমং তপঃ॥
অহিংসা পরমাে যজ্ঞস্তথাহিংসা পরম ফলম্।
হিংসা পরমং মিত্রমহিংসা পরমং সুখম।
অহিংসা পরমং সত্যমহিংসা পরমং শ্রুতম্ ॥
সর্বযজ্ঞেসু বা দানং সর্বতীর্থেসু বাপ্লুতম।
সর্ব্বদানফলং বাপি নৈতত্তুল্যমহিংসয়া ॥
অহিংস্রোস্য তপােহক্ষয্যমহিংস্রোস্য যজতে সদা।
অহিংস্রঃ সর্বভূতানাং যথা মাতা যথা পিতা।।
এতৎ ফলমহিংসাযা ভূষশ্চ কুরুপুঙ্গব!।
ন হি শক্যা গুণা বক্তমপি বর্ষশতৈরপি ॥
[ মহাভারত অনুশাসন পর্ব, অধ্যায় ১০১, শ্লোকঃ ৩৭-৪১ ]
🌿অনুবাদঃ
অহিংসা পরম ধর্ম, অহিংসা উত্তম ইন্দ্রিয়দমন, অহিংসা পরম দানের তুল্য এবং অহিংসা পরম তপস্যা॥
অহিংসা প্রধান যজ্ঞস্বরূপ, অহিংসা উত্তম ফলজনক, অহিংসা পরম বন্ধু- স্বরূপ, অহিংসা উত্তম সুখ উৎপাদন করে। অহিংসা পরম সত্যের তুল্য এবং অহিংসা বিশেষ শাস্ত্রজ্ঞানের সমান ॥
সমস্ত যজ্ঞে যে দান, সকল তীর্থে যে স্নান কিংবা সকল দানের যে ফল ; এই সমস্তও অহিংসার তুল্য নয়॥
হিংসাশূন্য মানুষের অক্ষয় তপস্যা হয়, হিংসারহিত মানুষ সর্বদাই যজ্ঞ করেন এবং হিংসা শূন্য লােক সমস্ত প্রাণীরই পিতা ও মাতার তুল্য হয়ে থাকে ॥
কৌরবশ্রেষ্ঠ (যুধিষ্ঠির)!এই অহিংসার প্রচুর ফল ; অহিংসার সমস্ত গুণ শত বছরেও বলে শেষ করা যায় না ॥

যে ত্বক্ষরমনির্দেশ্যমব্যক্তং পর্যুপাসতে।
সর্বত্রগমচিন্ত্যং চ কূটস্থমচলং ধ্রুবম্।।
সংনিয়ম্যেন্দ্রিয়প্রামং সর্বত্র সমবুদ্ধয়ঃ।
তে প্রাপ্নুবন্তি মামেব সর্বভূতহিতে রতাঃ।
[শ্রীমদ্ভগবদগীতা ১২/৩,৪]
🌿অনুবাদঃ
যাঁরা সমস্ত ইন্দ্রিয় সংযত করে, সকল জীবের প্রতি সমভাবাপন্ন হয়ে এবং সমস্ত জীবের কল্যাণে রত হয়ে আমার অক্ষর, অনির্দেশ্য, অব্যক্ত, সর্বত্র, অচিন্ত্য, কুটস্থ, অচল, ধ্রুব ও নির্বিশেষ স্বরূপকে উপাসনা করেন, তাঁরা অবশেষে আমকেই প্রাপ্ত হন।

মৎকর্মকৃন্মৎপরমো মদ্ভক্তঃ সঙ্গবর্জিতঃ ।
নির্বৈরঃ সর্বভূতেষু যঃ স মামেতি পাণ্ডব ॥
॥শ্রীমদ্ভগবদগীতা ১১/৫৫॥
🌿অনুবাদঃ
হে অর্জুন ! যিনি আমার অকৈতব সেবা করেন, আমার প্রতি নিষ্ঠাপরায়ণ, আমার ভক্ত, জড় বিষয়ে আসক্তি রহিত এবং সমস্ত প্রাণীর প্রতি শত্রুভাব রহিত, তিনিই আমাকে লাভ করেন।

সর্বভূতেষু যেনৈকং ভাবমব্যয়মীক্ষতে ।
অবিভক্তং বিভক্তেষু তজ্ জ্ঞানং বিদ্ধি সাত্ত্বিকম্ ॥
[শ্রীমদ্ভগবদগীতা ১৮/২০]
🌿অনুবাদঃ
যে জ্ঞানের দ্বারা সমস্ত প্রাণীতে এক অবিভক্ত চিন্ময় ভাব দর্শন হয়, অনেক জীব পরস্পর ভিন্ন হলেও চিন্ময় সত্ত্বায় তারা এক, সেই জ্ঞানকে সাত্ত্বিক বলে জানবে।


যো হি খাদতি মাংসানি প্রাণিনাং জীবিতৈষিণাস।
হতানাং বা মৃতানাং বা ব্যথা হন্তা তথৈব সঃ ॥
ধনেন ক্রয়িকো হস্তি খাদকশ্চোপভােগতঃ।
ঘাতকো বধবন্ধাভ্যামিত্যেষ ত্রিবিধাে বধঃ ॥
অথাদন্ননুমােদংশ্চ ভাবদোষেণ মানবঃ।
যোহনুমোদতি হন্যন্তং সোহপি দোষেণ লিপ্যতে।।
(মহাভারত অনুশাসন পর্ব, অধ্যায় ১০০, শ্লোক ৬৮-৭০)
🌿অনুবাদঃ
যে ব্যক্তি নিহত ও মৃত জীবনার্থী প্রাণিগণের মাংস ভক্ষণ করেন, তিনি পশুহত্যাকারীর সমান পাপভাগী হন।। ক্রেতা ধন দ্বারা প্রাণীহত্যা করে, খাদক উপভোগের জন্য হত্যা করে এবং ঘাতক বধ ও বন্ধদ্বারা হিংসা করে ; এই তিন প্রকারে নিষ্ঠুর মানুষ প্রাণী হত্যা করে।। অনেক ব্যক্তি মাংস ভক্ষণ করেন না কিন্তু স্বভাবের দোষে অন্যকে খুশি করার জন্য পশুহত্যার অনুমোদন করেন; অতএব যে মানুষ পশু হত্যার অনুমোদন করে, সেও সেই হত্যার পাপে লিপ্ত হয় ||