Ticker

200/recent/ticker-posts

Header Ads Widget

Responsive Advertisement

অন্য ধর্মাবলম্বীরা সনাতনীদের করা কিছু প্রশ্ন এবং আমাদের উত্তর (পর্ব-২)


১) রিগবেদ অধ্যায়-৩, খন্ড-৩১, শ্লোক: ১-২ ‘‘পিতা
তার মেয়ের সাথে অশ্লীলকর্মে
লিপ্ত’’- =>এছাড়া মা- ছেলে দূষ্কর্ম,
এমন বিশ্রি বর্ণনা যেই গ্রন্থে তা কি
করে সৃষ্টিকর্তার বাণী হতে পারে?

.
 তাদের এই দাবিটা পড়েই এদের দৌড় সম্পর্কে ভালো ধারণা হয়ে গেছে, কেননা ঋকবেদে অধ্যায় : খন্ড : শ্লোক -দিয়ে কোন মন্ত্র নেই,ঋগবেদে মন্ত্রগুলো সুক্ত ও মন্ডলে বিভক্ত। তবুও তাদের সেই রেফারেন্স অনুসারে ঋগ্বেদে পেলাম---

শাসদ্বহির্দুর্হিতুর্নপ্তাং গাদ্ধিদ্ধাঁ ঋতস্য দীধিতিং সপর্য্যন।
পিতা যত্র দুহিতুঃ সেকমৃঞ্জন্ সং শগ্ম্যেন মনসা দধম্বে।।
(ঋগ্বেদ-- ৩/৩১/১)

.
অনুবাদ- “ঐ আত্মহীন পিতা, যে পরিবারের ধারক(পোষক), নির্দেশ করে তার নাতি(পুত্র তুল্যা)যে তার কন্যার সন্তান এবং যজ্ঞ করার দক্ষতার উপর আস্থা রাখে, সন্মানক(তার জামাই কে)নানাবিধি উপহারের সঙ্গে, সেই পিতা বিশ্বাস করে কন্যার গর্ভধারণের উপর, নিজেকে সমর্থন করে শান্তিপূর্ণ ও খুশি মনে”
.
★ভাবার্থ- “হে মানব! যেমন একটি কন্যা পিতা হতে জন্মলাভ করে, সুতরাং এই উষা(ভোর) জন্ম নেয় সূর্য হতে, যেমন স্বামী গর্ভধারণ করাই তার স্ত্রীর, সুতরাং এই সূর্য স্থাপন করে তার বীর্য(তেজঃ) ভোরের আলোকে রশ্মি আকারে। এই উষা হল সূর্যের কন্যা তুল্য যেখান থেকে জন্ম নেই একটি পুত্র উষা লগ্নে সকালের আকারে”
.
★এটি ভোরের অপূর্ব সুন্দর প্রাকৃতিক দৃশ্য বর্ণনাকারী একটি বেদ মন্ত্র। ভোরে উদিত সূর্য রশ্মি হল এখানে “বীর্য” অর্থ্যাৎ “সূর্যের তেজ” ।এখানে সেই মূহর্ত অর্থ্যাৎ উষালগ্ন যা অপূর্ব সুন্দর তাই নারী রূপে কল্পিত সূর্যকন্যা এবং সকাল যা আলোক তেজঃ রূপি ও পুত্ররূপে কল্পিত উষার পুত্র।
(অনুবাদ- পন্ডিত  সত্যকাম বিদ্যালংকার)


২) দেবদাসীর ও যোগিনীর মত পতিতা
চরিত্রের সাথে ভগবান ও ব্রাহ্মনগণ কি
করে অশ্লীলকর্মে লিপ্ত হন? যদি তারা
প্রকৃতার্থে ভগবান হয়ে থাকেন?


 👉এই প্রশ্নটা ততোটা গুরুত্ব বলে মনে করি না, কেননা যোগিনী কিন্তু পতিতাবৃত্তি করেছিল এরকম কোন বিখ্যাত নারী সনাতন ধর্মে ছিল না। যদি জ্ঞানপাপীরা কারো নাম নির্দিষ্ট করে বলতো তবে অবশ্যই সেটা বিশ্লেষণ করতাম।

কিন্তু তারা অন্ধকারে ঢিল মারলো।
তারপর আবার বললো ভগবান ও ব্রাহ্মণগণ কোন অশ্লীল কর্মে লিপ্ত হলো।
কিন্তু বললোনা কে করলো?
কোন ব্রাহ্মণ সেটাই তো জানলাম না, যদিওবা কোন ব্রাহ্মন করে থাকে তবে সেটা সনাতন ধর্মের কি দোষ???
ব্রাহ্মন এর কথায় কি সনাতন ধর্ম চলে???
সনাতন ধর্মতো ঈশ্বর প্রেরিত পবিত্র বেদ এবং শ্রীগীতার আলোকে চলে।
মানুষের মধ্যে যদিও কেউ খারাপ কাজ করে তবে ধর্মের দোষ দিয়ে লাভ নেই। কারণ সনাতন ধর্ম সর্বদাই মানুষকে সঠিক পথে চলতে বলে।

৩)শিব তার নিজের ছেলে গনেশকে চিনতে পারেনি
কেন?চিনতে না পারার জন্য ছেলের গর্দান_কেটে
ফেলেছিলেন.!তাহলে তিনি তার সৃষ্টিকে কি করে চিনবেন.?
ভুলে যাওয়া কি সৃষ্টিকর্তার বৈশিষ্ট্য?

👉সৃষ্টিকর্তা এমন না যে তার সৃষ্টিতে ঘটে যাওয়া বা ঘটবে এরুপ সম্পর্কে তিনি জানেন না। শিব তার ছেলেকে চিনবেন না এরুপ একটা কথা হাস্যকর ছাড়া আর কিছুইনা। তবে এর উত্তর জানতে হলে প্রথমে জানতে হবে শিব ও গজাসুর সম্পর্কটা কি?

 প্রথমত: পৌরাণিক কালে হাতির বৈশিষ্ট্যসম্পন্ন এক অসুরের অস্তিত্ব ছিল। তার নাম ছিল গজাসুর। সে একবার প্রচণ্ড তপস্যা করেছিল। শিব তার তপস্যার তুষ্ট হয়ে তাকে মনোমত বর দিতে ইচ্ছা করেন। অসুর চাইল, তার শরীর থেকে যেন সব সময় আগুন বেরিয়ে আসতে থাকে, যাতে কেউ তার কাছে ঘেঁষতে সাহস না পায়। শিব তাকে সেই বর দেন। কিন্তু গজাসুর তার তপস্যা চালিয়ে গেল। শিব আরেকবার তার সামনে এসে তাকে বর দিতে চাইলেন। অসুর বলল, “আমি চাই আপনি আমার পাকস্থলীতে বাস করুন।” অল্পে তুষ্ট ! শিব গজাসুরকে মনোমত বর দিয়ে দেন। কিন্তু এই বর অন্য সমস্যার সৃষ্টি করে। পার্বতী তাঁকে ( শিব) খুঁজতে বের হন। শেষে তিনি নিজের আরাধ্য বিষ্ণুর সাহায্যে শিবকে খুঁজে পান। বিষ্ণু তখন শিবের বাহন নন্দীকে এক নৃত্যকারী ষাঁড় বানিয়ে নিজে বাঁশিওয়ালার ছদ্মবেশ নেন। এরপর উভয় আসেন গজাসুরের কাছে বাঁশি বাজাতে। বিষ্ণুর বাঁশি শুনে গজাসুর খুশি হয়ে তাঁকে কিছু দিতে চাইল। বিষ্ণু বললেন, তাঁর গজাসুরের পাকস্থলীতে বন্দী শিবের মুক্তি চাই। সে বিষ্ণুকে চিনতে পেরে তাঁর পায়ে লুটিয়ে পড়ল শিব মুক্তি পেলেন। তখন গজাসুর তপস্যার শেষ বরটি চাইল। সে বলল, “আমি চাই, আমি মরে যাবার পরও যেন লোকে আমার মাথাটিকে পূজা করে।
দ্বিতীয়ত : গণপতির জন্ম হয়ে ছিল দেবী পার্বতীর গায়ে মাখা হলুদ অর্থাৎ ময়লা থেকে। যার কারণে গণেশ ছিলেন জেদি ও অহংকারী। এক দিন দেবী পার্বতী কৈলাসে স্নান করছিলেন। স্নানাগারের বাইরে তিনি নন্দীকে দাঁড় করিয়ে রেখেছিলেন, যাতে তাঁর স্নানের সময় কেউ ভিতরে ঢুকতে না পারে। এই সময় শিব এসে ভিতরে প্রবেশ করতে চান। নন্দী শিবের বাহন। তাই প্রভুকে তিনি বাধা দিতে পারলেন না। পার্বতী রেগে গেলেন। তিনি ভাবলেন, নন্দী যেমন শিবের অনুগত, তেমনই তাঁর অনুগত কোনো নেই। তাই তিনি তাঁর প্রসাধনের হলুদমাখা( বলতে পারেন ময়লা) কিছুটা নিয়ে গণেশকে সৃষ্টি করলেন এবং গণেশকে নিজের অনুগত পুত্র রূপে ঘোষণা করলেন। এরপর থেকে পার্বতী স্নানাগারের বাইরে গণেশকে দাঁড় করাতেন। একবার শিব এলেন। তিনি ভিতরে প্রবেশ করতে চাইলেন। কিন্তু গণেশ তাঁকে বাধা দিলেন। শিব রেগে গিয়ে তাঁর ভক্তদের আদেশ দিলেন গণেশকে দাড় থেকে সরার জন্য । কিন্তু গণেশ শিব ভক্তদের উপর অনাক্রমণ করে তাদের পরাজিত করেন। তাই তিনি গণেশের সঙ্গে যুদ্ধ করতে এলেন। শিব গণেশের মুণ্ডটি কেটে তাকে হত্যা করলেন। একথা জানতে পেরে পার্বতীও রেগে সমগ্র সৃষ্টি ধ্বংস করে ফেলতে উদ্যোগী হলেন। তখন সৃষ্টিকর্তা ব্রহ্মা তাঁর কাছে ক্ষমা ভিক্ষা করলেন। তখন পার্বতী দুটি শর্ত দিলেন। প্রথমত, গণেশের প্রাণ ফিরিয়ে দিতে হবে এবং সকল দেবতার পূজার আগে তাঁর পূজার বিধি প্রবর্তন করতে হবে। সর্বোপরি দেবী পার্বতী শর্ত , গজাসুরকে দেওয়া কথার মান ও গণেশের অহংবোধ থেকে মুক্তি এবং সৃষ্টির ভারসাম্য রক্ষার জন্য গনেশের শিরোচ্ছেদ করা হয়েছিল । আরে শিব তো তার ছেলের গর্দান কেটেছিল সৃষ্টির মঙ্গলের জন্য । তাই তাকে নিয়ে অনেকে অনেক কিছু বলে,তাই না।নবী ইব্রাহিম(আ) কি করে ছিল? সে কথা সবাই জানে, বড় ছেলে ইসমাঈল(আ)কে কুরবানীর নাম করে ইসহাক(আ)কে কুরবানী করে ছিল। তিনি ও পুত্র হত্যা করেছিলেন। কিন্তু সৃষ্টির কল্যানের জন্য, নাকি সিংহাসন লাভের জন্য?  আশা করি সনাতনীরা বুঝলেও অপপ্রচারকারী ঐ সকল মূর্খরা বুঝবে  কি না সন্দেহ আছে।