Ticker

200/recent/ticker-posts

Header Ads Widget

Responsive Advertisement

বৈদিক ১৬ বিধ সংস্কার

👉মানব জীবনের ষোড়শবিধ সংস্কার মনুষ্য জীবনকে সুন্দর ও কল্যাণকর করে গড়ে তোলার লক্ষ্যে প্রাচীন ঋষিরা অনেক ধর্মীয় আচার-আচরণ ও মাঙ্গলিক কর্মের নির্দেশ দিয়েছেন।এগুলোকে সংস্কার বলা হয়। সকল আচার-আচরণ‘মনুসংহিতা',‘যাজ্ঞবল্ক্যসংহিতা'‘পরাশরসংহিতা' প্রভৃতি স্মৃতিশাস্ত্রে (হিন্দু বিধি বিধানের গ্রন্থ) পাওয়া স্মৃতিশাস্ত্রে (হিন্দু বিধি বিধানের গ্রন্থ) পাওয়া যায়।

👉স্মৃতিশাস্ত্রে ১৬ প্রকার সংস্কারের উল্লেখ আছেঃ—
গর্ভাধান, পুংসবন,সীমন্তোন্নয়ন, জাতকর্ম,নামকরণ,নিষ্ক্রমণ,অন্নপ্রাশন,চুড়াকরণ,কর্ণবেধ, উপনয়ন,বেদারম্ভ,সমাবর্তন,বিবাহ,বানপ্রস্থ,সন্ন্যাস ও অন্ত্যেষ্টবিবাহ,বানপ্রস্থ,সন্ন্যাস ও অন্ত্যেষ্টি।।

১) গর্ভদানঃ বিবাহের পর স্বামী স্ত্রী সন্তান জন্মদানের জন্য সকলের আশীর্বাদ পান। এই সংস্কার দ্বারা তারা স্ব্যাস্থবান, মহৎ এবং উদার হৃদয়ের সন্তান প্রার্থনা করেন।

 (অথর্ব্ববেদ-৬/৮১/২)
পরিহস্ত বি ধারয় যোনিং গর্ভায় ধাতবে।
মর্য়াদে পুত্রমা ধেহি তং ত্বমা গময়াগমে ॥

সরলার্র্থঃ হে শক্তিধর পুরুষ! গর্ভের পুষ্টির জন্য স্ত্রী যোনীকে বিশেষরূপে রক্ষা কর। হে মর্যাদাময়ী পত্নী! গর্ভস্থ সন্তানকে বিশেষভাবে পুষ্ট কর। তুমি সেই সন্তানকে উপযুক্ত সময়ে প্রসব কর।

২) পুংসবনঃ গর্ভদানের ৩ মাস পর এই সংস্কার পালন করতে হয়। গর্ভাবস্থায় সন্তানের সুস্থ ভাবে বেড়ে ওঠার জন্য ঈশ্বরের কাছে প্রার্থনা করা হয়।

 (অথর্ব্ববেদ-৩/২৩/৬)
য়াসাং দ্যৌঃ পিতা পৃথিবী মাতা
সমুদ্রো মুলং বীরুধা বভুব।
তাস্ত¡া পুত্রবিদ্যায় দৈবীঃ প্রাবন্তে ¦াষধয়ঃ ॥

সরলার্র্থঃ হে স্ত্রী! যে ঔষদি সমূহের দ্যুলোক পিতা, পৃথ্বীলোক মাতা এবং সমুদ্র লোক মূল আধার সেই ঔষধি সমূহ তোমাকে সন্তান লাভের জন্য দান করিতেছি। দিব্য গুণযুক্ত ঔষধি সমূহ তোমাকে রক্ষা করুক।

৩) 
সীমন্তোন্নয়নঃ এটা গর্ভধারনের ষষ্ঠ বা অস্টম মাসের শেষে করা হয় বাচ্চার অঙ্গ প্রত্তঙ্গ পরিপূর্ণ বিকাশের জন্য।

(ঋগে¦দ-২/৩২/৪)
রাকামহং সুহবাং সুষ্টতী হুবে শৃণোতো ন সুভগা বোধতু ত্মানা।
সীবত্বপঃ সুচ্যাহচ্ছিদ্যমানয়া দদাতু বীরং শতদায় মুকথ্যম্ ॥

সরলার্থঃ আমি দানশীলা অবাহনযোদ্য স্ত্রীকে স্তুতি দ্বারা আবাহন করিতেছি। সৌভাগ্যবতী স্ত্রী আমার আবাহন শ্রবণ করিয়া আমাকে বিশেষভাবে উপলব্দি করুক। সে আমাকে দানবীর বলবান যশস্বী পুত্র দান করুক।

৪) জাতকর্ম: জন্মগ্রহনের দিন বাচ্চা কে জাতকর্মের মাধ্যমে পৃথিবিতে স্বাগতম জানান হয়।

 (ঋগে¦দ-৫/৭৮/৯)
দশ মাসা ঞ্জুশয়ানঃ কুমারো অধি মাতরি।
নিরৈতু জীবো অক্ষতো জীবো জীবন্ত্যা অধি ॥

সরলার্থঃ হে পরমাত্মা! দশমাস পর্যন্ত মাতৃগর্ভে সুকুমার জীব সুপ্ত থাকিয়া যেন প্রাণ ধারণ করে এবং জীবিত মাতার গর্ভ হইতে যেন বিনা কষ্টে ভূমিষ্ট হয়।

৫) নামকরণঃ জন্মের এগার মাসে এই সংস্কার পালন করা হয় এবং বাচ্চাকে একটি নাম দেয়া হয়।

(যর্জুর্ব্বেদ-৭/২৯)
কোহসি কতমোহসি কস্যাসি কো নামাসি।
য়স্য তে নামামবন্মহি য়ং ত্বা সোমেনা তীতৃপাম।
বভর্বব স্বঃ সুপ্রজাঃ প্রজাভিঃ স্যাং সবীরো বীরৈঃ সুপোষঃ পোষৈঃ ॥

সরলার্থঃ হে সন্তান! তুমি যে জ্যোতিঃ স্বরূপ, পরম জ্যোতিঃ স্বরূপ, পরমাত্মার পুত্র, তোমার নাম আত্মা, ইহা আমরা ভালো ভাবে জানি। শান্তিদায়ক পদার্থ দ্বারা তোমাকে আমরা তৃপ্ত করিতেছি। প্রাণস্বরূপ, দুঃখনাশক, সুখময় পরমাত্মার কৃপায় আমার সন্তানেরা সুসন্তান হোক। বীর সন্তান হোক। আমি বীর বৃন্দদ্বারা পরিবেষ্টিত হইব। পুষ্টিকর পদার্থের দ্বারা আমি সুপুষ্ট হইব।

৬) 
নিষ্ক্রমণঃ জন্মের চতুর্থ মাসে এই সংস্কার পালন করা হয়।শিশু সন্তান কে বাইরের পরিবেশে উন্মুক্ত করা হয়। যাতে সূর্যের আলো তাকে স্বাস্থ্যবান করে তোলে। দীর্ঘায়ুর জন্য প্রার্থনা করা হয়। এই সময় থেকে সন্তান প্রকৃতির কোলে প্রাকৃতিক ভাবে বড় হতে থাকে।

(অথর্ব্ববেদ-৮/২/১৪)
শিবে তে স্তাং দ্যাবা পৃথিবী অসন্তাপে অভিশ্রিযৌ।
শং তে সূর্যা আ তপতু শং বাতো বাতু তে হৃদে।
শিবা অভি ক্ষরন্তু ত্বাপো দিব্য পয়স্বতীঃ ॥

সরলার্থঃ হে বালক! তোমার নিষ্ক্রমনকালে দ্যুলোক ও ভূলোক কল্যাণকারী, সন্তাপহীন, শোভা ও ঐশ্বর্য্য দাতা হউক। সূর্য তোমার নিকট কল্যাণপ্রদ এবং বায়ু তোমার হৃদয়ের অনুকুল মঙ্গলদায়ক হউক। দিব্যগুণযুক্ত স্বাদু জল তোমার জন্য কল্যাণকারী হইয়া প্রবাহিত হউক।

৭) অন্নপ্রাসনঃ সন্তানের যখন দাঁত উঠতে থাকে সাধারনত ছয় থেকে আট মাস বয়সে এই সংস্কার পালন করা হয়। এখন থেকেই তাকে শক্ত খাবার দেয়া হয়।

(অথর্ব্ববেদ-৮/২/১৯)
যদশ্মাসি যৎপিবস্য ধান্য কৃষ্যাঃ পয়ঃ।
য়দাদ্যং য়দনাদ্যং সর্ব্বং অন্নমবিষং কৃণোমি ॥

সরলার্থঃ হে বালক! কৃষি দ্বারা উৎপন্ন যে অন্ন তুমি ভক্ষণ করিতেছ। যাহা ভক্ষ্য এবং যাহা পুরাতন হওয়ায় অভক্ষ্য, সে সবই তোমার জন্য রোগ রহিত অমৃতময় হোক।

৮) চুড়াকরণঃ প্রথম থেকে তৃতীয় বছর বয়সের মধ্যে এই সংস্কার পালন করা হয়। প্রথম বারের মত মাথার সব চুল ফেলে দেয়া হয়। সুস্বাস্থ্য এবং সুস্থ্য্ মানসিক বিকাশের জন্য প্রার্থনা করা হয়।

 (অথর্ব্ববেদ-৬/৬৮/৩)
য়েনাবপৎ সবিতা ক্ষরুণে সোমস্য রাজ্ঞো বরুণস্য বিদ্বাণ।
তেন ব্রহ্মণো বপতেদমসং গোর্মানশ্ববানয়ম স্তু প্রজাবান ॥

সরলার্থঃ অভিজ্ঞ বিদ্বান যেরূপ ক্ষুর দ্বারা শান্ত স্বভাব রাজা ও শ্রেষ্ঠ পুরুষকে মুন্ডন করেন সেইরূপ ক্ষুর দ্বারা হে ব্রাহ্মণগণ! এই বালকের কেশ কর্তন করুন। এই বালক গো অশ্ব ও সন্তান লাভ করুক।

৯) কর্ণভেদঃ তিন বছর বয়সে কান ফোরানো হয় এবং শারীরিক সুস্থতার জন্য প্রার্থনা করা হয়।

 (অথর্ব্ববেদ-৬/১৪/২)
লোহিতান স্বধিতিনা মিথুনং কর্ণয়ো কৃধি।
অকর্ত্তামশ্বিনা লক্ষা তদন্তু প্রজয়া বহু ॥

সরলার্থঃ ধাতু নির্র্মিত অস্ত্র দ্বারা দুই কর্ণের ছেদ করা বৈদ্য এই শোভা বর্ধ্বক কার্য করুক। সে প্রজার কল্যাণকারী হোক।

১০) উপনয়নঃ ৫ থেকে ৮ বছর বয়সের যে কোন সময় এই কাজ করা হয়। উপনয়ন মানে কার সন্নিকটে আসা। এই সংস্কারের মাধ্যমে একটি শিশু গুরু/ শিক্ষকের সন্নিধ্যে আসে। তাকে একটি পবিত্র সূতা দেয়া হয়, যাতে তিনটি আঁশ থাকে। এটি ছাত্রজ়ীবনের তিনটি নিয়মানুবর্তিতা নির্দেশ করেঃ জ্ঞান, কর্ম, ভক্তি।শাস্ত্রে জীবন যাপনের যে পদ্ধতি উল্লেখ আছে তার প্রতি ওই শিশুটির অঙ্গিকার নির্দেশ করে। ব্রহ্মচর্য/ কৌমার্য (অবিবাহিত অবস্থা) ছাত্র জীবনের সবচেয়ে গুরুত্ত পুর্ণ বিষয়।নিজেকে নিয়ন্ত্রন করা এবং সব রকম খারাপ কাজ থেকে বিরত থাকার অভ্যাস ছাত্র জীবনেই করতে হয়। নিয়মিত পড়ালেখা এই সংস্কারের পরেই শুরু হয়।

(অথর্ব্ববেদ-১১/৫/৩)
আচার্য উপনয়মানো ব্রহ্মচারিনং কৃণুতে গর্ভমন্তঃ।
তং রাত্রীস্তিস্র উদরে বিভর্ত্তি জাতং দ্রষ্টুমভি সংয়তি দেবাঃ ॥

সরলার্থঃ আচার্য ব্রহ্মচারীকে উপনয়ন দিয়া নিজের সাহচর্যে রাখেন। আধ্যাত্মিক, অধিভৌতিক ও আধিদৈবকি এই তিন অবিদ্যা অন্ধকার দূর করিতে নিজের বিদ্যার বেষ্টনীর মধ্যে তাহাকে ধারণ করেন। যখন ব্রহ্মচারী বিদ্যালাভ করিয়া দ্বিতীয় জন্ম লাভ করে তখন তাহাকে দেখিবার জন্য সব দিক হইতে বিদ্বানেরা আসিয়া সমবেত হন।

১১) বেদারম্ভঃ উপনয়ন এর পরেই এই সংস্কার পালন করা হয়। এই সময় বেদ এবং বিভিন্ন শাস্ত্র অনুসারে আধ্যাত্মিক জ্ঞান অর্জন শুরু হয়।জ্ঞানের সকল শাখায় তাকে বিচরণ করতে হয় এবং এর মাধ্যমে সে জাগতিক বিষয়ের সাথে আধাত্মিক বিষয় সম্পর্কে জানতে পারে।

(অথর্ব্ববেদ-১১/৫/২৪)
ব্রহ্মচারী ব্রহ্ম ভ্রাজদ বিভর্তি তস্মিদ্বেবা অধি বিশ্বে সমোতাঃ।
প্রাণাপানৌ জনয়ন্নাদ ব্যানং বাচং মনো হৃদয় ব্রহ্ম মেধাম্ ॥

সরলার্থঃ ব্রহ্মচারী জ্যোতির্র্ময় বৈদিক জ্ঞানকে ধারণ করে। এ জন্য তাহার মধ্যে সব দিব্যগুণ অবস্থান করে। সে প্রাণ, আপান ব্যান বাক্য, মন, হৃদয়, জ্ঞান ও মেধাকে উৎকর্ষ দান করে।

১২) সমাবর্তনঃ ২১ থেকে ২৫ বছর বয়সের মধ্যে যখন শিক্ষা গ্রহন শেষ হয় তখন এটি পালন করা হয়। গুরু ছাত্র কে যোগ্যতা অনুযায়ী ডিগ্রি প্রদান করেন। এরপর একজন ছাত্র আত্ম নির্ভর এবং স্বাধীন জীবন যাপন করে।

(ঋগে¦দ-৩/৮/৪)
যুব সুবাসাঃ পরিবীত আগাৎস উ শ্রেয়ান ভবতি জায়মানঃ।
তং ধীরাসঃ কবয় উন্নয়ন্তি স্বাধ্যো মনসা দেবয়ন্ত ॥

সরলার্থঃ ব্রহ্মচর্য পূর্ব্বক বিদ্যালাভ করিয়া উত্তম বস্ত্র পরিধান করিয়া যৌবনকালে যিনি গার্হস্থ্য আশ্রমে উপনীত হন তিনিই দ্বিজত্ব লাভে খ্যাতি অর্জন করিয়া মহৎ হন। ধ্যান পরায়ন, মননশীল, জ্ঞান, প্রচারক, ধৈর্যবান বিদ্বানেরা সেই পুরুষকে উন্নতি লাভে সহায়তা প্রদান করেন। (ব্রহ্মচর্য আশ্রম)।

১৩) বিবাহঃ ছাত্রজীবনের ব্রহ্মচর্য শেষে একজন বিয়ে করে পরবর্তী জ়ীবনে পদার্পন করে, গৃহস্থ জ়ীবনে। একজন পুরুষ আর একজন মহিলা যারা এতদিন স্বাধীন জীবন যাপন করেছে এখন একসাথে জীবনভর চলার সপথ গ্রহন করে। বিয়ের পর সন্তান হয় এবং পরিবারের ধারা চলতে থাকে।

 (অথর্ব্ববেদ-১১/৫/১৮)
ব্রহ্মচর্য়েণ কন্যা যুবানাং বিন্দতে পতিম।
অনডৃবান্ ব্রহ্মচর্যেনাশ্বো ঘাসং জিগীর্ষতি ॥

সরলার্থঃ ব্রহ্মচর্য অবলম্বন করার পর কুমারী কন্যা যুবা পতিকে লাভ করিবে। বলবান্ ও বুদ্ধিমান ব্যক্তিই ভোগ্য পদার্থকে সম্যক ভোগ করিতে পারে। (গার্হস্থ্য আশ্রম)।

১৪) বানপ্রস্থঃ ৫০ বছর বয়সে গৃহস্থ আশ্রম শেষে বানপ্রস্থ আশ্রম শুরু হয়। নিজের সুবিধার জন্য তিনি যে সব কাজ করতেন তার সব কিছু পরিত্যাগ করেন। পরিবারের সব দায়িত্ব সন্তানের হাতে তুলে দিয়ে পূজর্চনা, ধ্যান এবং মানব সেবায় নিয়োজিত হন।

(ঋগে¦দ-১০/১৪১/৫)
ন বা অরণ্যানি হর্স্তন্যশ্চেন্নতি গচ্ছতি।
স্বাদোঃ ফলস্য জগ্ধায় যথাকামং নি গদ্যতে ॥

সরলার্থঃ বানপ্রস্থ গ্রহণকারীকে বন্য পশু হনন করে না, অন্যান্য প্রাণীও ইহাদিগকে হনন করেনা। ইহারা সুমিষ্ট ফল ভক্ষণ করিয়া শান্তিময় জীবন অতিবাহিত করে। (বানপ্রস্থ আশ্রম)।

১৫) সন্ন্যাস: যদিও ৭৫ বছর বয়সে সন্ন্যাস গ্রহন করার কথা বলা আছে তারপরেও আত্মনিয়ন্ত্রন এবং আধ্যাত্মিকতা দ্বারা যিনি জাগতিক সব কিছু থেকে নিজেকে দূরে সরিয়ে রাখতে পারেন তিনিই সন্ন্যাস গ্রহন করবেন। এ সময় তিনি ধনসম্পদ, সামাজিক ও পারিবারিক বন্ধন এবং সকল ইচ্ছা আকাঙ্ক্ষা পরিত্যাগ করবেন । গাঢ় হলুদ রঙের ঢিলেঢালা পোশাক এই কঠোর জীবনের প্রতীক।তার কোন নির্দিষ্ট পরিবার সমাজ অথবা গৃহ নেই।

(ঋগে¦দ-৯/১১৩/৪)
ঋতং বদন্ন তদ্যুম্ন সত্যং বদনং সত্য কর্ম্মন্।
শ্রদ্ধাং বদনৎ সোম পরিষ্কৃত ইন্দ্রায়েংদো পরিস্রব ॥

সরলার্থঃ হে সত্যকীর্ত্তি, সত্যকর্মা, জ্ঞানময়, আনন্দদাতা সন্নাসী। সত্য বাণী ন্যায় বাক্য বলিয়া সত্য ধারণের উপদেশ করিয়া এবং পরমাত্মার উপাসনা দ্বারা শুদ্ধ হইয়া যোগ দ্বারা সিদ্ধি প্রাপ্তির জন্য প্রযত্ন কর। (সন্ন্যাস আশ্রম)।

১৬) অন্তেষ্টীঃ মৃত্যুর পর শবদাহ করা হয় ।কিন্তু আত্মা অমর। যখন দেহ অগ্নিতে দাহ করা হয় তখন শরীর যে পাঁচটি উপাদান দিয়ে তৈরি, যেমন- মাটি, জল, আগুন, বাতাস এবং আকাশ প্রকৃতিতে মিশে যায়। মৃতের আত্মার শান্তিতে প্রার্থনা করা হয়। শবদাহ হচ্ছে মৃত দেহ সৎকারের সব চেয়ে ভাল উপায়।

 যর্জুর্ব্বেদ (৪০/১৫)
বায়ুরনিলমমৃতমখেদং ভস্মান্তং শরীরম্।
ওম্ ক্রতো স্মর ক্লিবে স্মর কৃতং স্বর ॥

সরলার্থঃ হে কর্মশীল জীব! শরীর ত্যাগের সময় পরমাত্মার নাম ওঁঙ্কার স্মরণ কর, আধ্যাত্মিক আধিদৈবিক প্রাণ এবং পূনঃরায় সেই প্রাণ স্বরূপ পরমাত্মাকে প্রাপ্ত হও। তৎপর ভৌতিক শরীর ভস্মে পরিণত হউক। ওঁ স্বস্তি! ওঁ স্বস্তি!! ওঁ স্বস্তি!!!